গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায়

একটি মেয়ের জন্য গর্ভবতী হওয়া এবং তার পরিবারের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরের বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ করার দ্বারা গর্ভবতী কিনা তা বোঝা যায়। তবে প্রাথমিক অবস্থায় পিরিয়ড মিস হওয়াকে গর্ভবতী হলে স্পষ্ট ধারণা করা হয়। কিন্তু জেনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ,পিরিয়ড মিস হওয়াই গর্ভধারণের একমাত্র লক্ষণ নয়।

অনেকের ক্ষেত্রে পিরিয়ড স্বাভাবিক হওয়া সত্বেও অনেকেই গর্ভধারণ হয়েছেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পিরিয়ড মিস হওয়াকেই গর্ভবতী বলে স্পষ্ট ধারণা করা হয়। তবে জেনে রাখু*ন,কোন শারীরবৃত্তিয় ঘটনার পরিবর্তনের ফলে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ খুব সহজে বুঝা যায়। উল্লেখ্য জেনে রাখা ভালো গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায়। তাই সম্পূর্ণ পোস্ট বিস্তারিত পড়ুন।

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায়

সাধারণ ক্ষেত্রে গর্ভধারণের ১ মাস পর থেকে একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে বিভিন্ন ধরনের শারীরবৃত্তিয় ঘটনা ঘটে থাকে। যার ফলে পিরিয়ড মিস হওয়ার পরেই এসব শারীরবৃত্তিয় ঘটনাকে গর্ভবতী হওয়ার পুরো লক্ষণ বলে মনে করে থাকি। তবে বেশিরভাগ মেয়েদের পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে থেকেই অর্থাৎ প্রথম সপ্তাহে প্রায় ৮০ শতাংশ মহিলা এই বমির সমস্যার ভুগে থাকেন।

এছাড়াও প্রায় ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত অর্থাৎ ছয় সপ্তাহের আগে প্রায় 50 শতাংশ মহিলাদের ক্ষেত্রে এ বমি করার অবস্থা সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ গুলির মধ্যে অনেকগুলি লক্ষণ আর প্রথম মাসেই প্রায় মহিলাদের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় হয়ে থাকে। যে লক্ষণ গুলি একজন মহিলার স্বাভাবিক মাসিকের সময় অথবা মাসিকের আগে অনুভূত হয়ে থাকে।

এছাড়া গর্ভবতী হওয়ার কিছু লক্ষণ গুলির মধ্যে স্তনে ব্যথা, পেট ফাঁপা ও কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। অর্থাৎ প্রায় গর্ভবতী হওয়ার এক মাসের মধ্যে সব সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও কিছু মহিলা রয়েছে যাদের প্রেগনেন্ট হওয়ার পরেও এরকম কোন সমস্যা দেখা দেয় না।

গর্ভাবস্থার লক্ষণ কতদিন আগে দেখা যায়

একজন মহিলার গর্ভধারণের চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর বমি শুরু হয়। যার দ্বারা গর্ভধারণের লক্ষণ বলে বিবেচনা করা হয়। এছাড়াও গর্ভধারণ করলে হওয়ার পিরিয়ড মিস হওয়ার আগেই অনেকের ক্ষেত্রে বমি শুরু হয়। যেখানে গর্ভাবস্থার লক্ষণ হিসেবে প্রায় ৮০ শতাংশ মহিলা বমি করে থাকেন।

অর্থাৎ এই সকল সমস্যাগুলো গর্ভধারণের প্রথম পিরিয়ড মিস হওয়ার আগেই এসব লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে। এছাড়াও গর্ভাবস্থার লক্ষণ হিসেবে ১ থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যেই স্তনে ব্যথা হয়। এবং গর্ভধারণের প্রথম ৩ মাসে এ গর্ভবতী নারীর ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ হয়। গর্ভধারণকালে প্রোজেস্টেরোনের স্তর বৃদ্ধি পাওয়া, শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়াও একটি গর্ভধারণের লক্ষণ।

যা সাধারণত প্রথম মাসেই এ সকল লক্ষণ গুলি দেখা দিয়ে থাকে। এমনকি পিরিয়ডের তারিখ ছাড়া ব্লিডিং হওয়া, ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করা ইত্যাদি। গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সাধারণত ২১ দিন পর থেকে খুব সহজে বোঝা যায়। এবং তার আগে থেকে এসব লক্ষণ গুলি দেখা দিয়ে থাকে ধীরে ধীরে।

মিস পিরিয়ড ছাড়া কি গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ নেই

পিরিয়ড ছাড়াও শারীরবৃত্তিয় এমন অনেক ঘটনা রয়েছে, যে ঘটনাগুলো দ্বারা একজন মহিলা খুব সহজেই বুঝতে পারেন যে তিনি গর্ভবতী হয়েছেন। আর বিশেষজ্ঞদের মধ্যে পিরিয়ড মিস হওয়াকে গর্ভধারণের (Pregnancy) একমাত্র লক্ষণ বলে মনে করা হয় না। অর্থাৎ মিস পিরিয়ড ছাড়াও গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ রয়েছে অনেক। এর মধ্যে উল্লেখিতঃ

  • শরীরে তাপমাত্রার বৃদ্ধি।
  • স্তনে ব্যথা পাওয়া।
  • বমি করা।
  • ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং হওয়া।
  • মর্নিং সিকনেস।
  • ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ।
  • ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব।
  • মুড সুইং ও মাথা ঘোরা।
  • হরমোনের স্তর বৃদ্ধি।
  • বারবার টয়লেটে যাওয়া।
  • গর্ভবতী নারী খেতে না চাওয়া।

কত দিন পর টেস্ট করলে গর্ভবতী বোঝা যায়?

অনিরাপদ সহবাস অর্থাৎ কোনো জন্মনিরোধক (কনডম, পিল বা বড়ি, ইনজেকশন) ব্যবহার না করে সহবাস করে থাকেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন নির্দিষ্ট সময়ে পিরিয়ড শুরু হয়েছে কিনা। যদি নির্দিষ্ট সময় পিরিয়ড শুরু না হয় তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রেগনেন্সি টেস্ট করাতে হবে।

তবে সহবাসের অন্যতম ২১ দিন পরে আপনাকে প্রেগনেন্সি টেস্ট করাতে হবে। তাহলে খুব সহজে এই প্রেগনেন্সি টেস্ট দ্বারা গর্ভবতী বোঝা যাবে। বর্তমানে এমন উন্নত প্রেগনেন্সি টেস্ট কিট করেছে যার সাহায্যে গর্ভধারণের ৯ দিন পরেই আপনি গর্ভবতী হয়েছেন কি না তা খুব সহজেই বুঝতে পারবেন।

গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয়

সাধারণ ক্ষেত্রে গর্ভধারণের ৪-৬ সপ্তাহ পর বমি শুরু হয়। তবে অনেকের ক্ষেত্রে এর আগেও বমি ভাব শুরু হতে পারে।এ সময় বমি হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে অ্যাস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনোর স্তর বৃদ্ধি পাওয়া। যার কারণে সকালে উঠেই বমি বমি ভাব শুরু হতে পারে। এছাড়া দিনের শুরুতেও এমন বমি ভাব দেখা যেতে পারে। তবে কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে যাদের গর্ভধারণের দুই সপ্তাহের মধ্যেও বমি ভাব দেখা যেতে পারে।

গর্ভবতী হওয়ার ১ম সপ্তাহের লক্ষণ

একজন গর্ভবতী মহিলার প্রথম সপ্তাহেই অর্থাৎ র*ক্তক্ষরণ ঋতুচক্রের মতোই ৬ থেকে ১২ দিন হালকা র*ক্তপাত হতে পারে। এবং তার খাওয়া দাওয়ায় মুখে অন্য রকম স্বাদ অনুভব করবে। এই প্রথম সপ্তাহেই শরীরের হরমোনের তাপমাত্রা পরিবর্তন হতে পারে। এই সময় ত্বকের সংবেদনশীলতা বেড়ে যায়, যার ধরুন চেহারায় কালো দাগ বা ছোপ দেখা দিতে পারে।  ক্লান্তি অনুভব হওয়া, এমনকি এই সময় মাথা যন্ত্রণা হতে পারে।

শেষ কথা

আশা করতেছি এই পোস্ট থেকে উপকৃত হয়েছেন। একজন গর্ভবতী মহিলার এই সময়কাল অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। খুব সতর্কতার সহিত এই সময় গুলো পার করতে হয়। তবে প্রথম অবস্থায় কিভাবে বুঝবেন গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায় । তবে আজকের আলোচনা আশা করছি আপনাদের কাছে উপকৃত মনে হয়েছে। ধন্যবাদ