সাধারণত প্রত্যেকের জ্বর হয়ে থাকে। তবে এই জ্বর অনেক সময় ভয়ের কারণ হয়ে দাড়ায়। তবে শরীরে জ্বর আসলে অতিসত্বর ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। তবে অল্প জ্বর সাধারণত প্রাথমিকভাবেই সারিয়ে নেওয়া যায়। যদি জ্বরের পরিমাণ বেশি হয়ে থাকে তাহলে সে বিষয়টি অনেক চিন্তার হয়ে যায়।আর অতিসত্বর সেসময় ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। তবে বেশি জ্বর হলে ডাক্তাররা যে ওষুধগুলো রোগীদের কে প্রদান করে থাকেন । সে ওষুধ বা ট্যাবলেট গুলো নিয়ে আজকে আলোচনা করেছি। অতএব আজকে আমাদের আলোচনার মূল বিষয় হচ্ছে জ্বরের এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম।
এন্টিবায়োটিক হচ্ছে কয়েক ধরনের জৈব রাসায়নিক ঔষধ, বিভিন্ন অনুজীব কে ধ্বংস করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। অনেক সময় ডাক্তাররা রোগীদেরকে জ্বরের এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট প্রদান করে থাকেন। যাদের অনেক দিন পর্যন্ত অল্প অল্প জ্বর থাকে। প্রাথমিক ওষুধ খেয়েও জ্বর নিরাময় হয় না। তাদেরকে সর্বশেষ চিকিৎসার প্রদান করার জন্য বিভিন্ন ডাক্তাররা এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট প্রদান করে থাকেন। তবে কোন এবং কি ওষুধ রোগীদেরকে প্রদান করে থাকেন তা নিয়ে আজকে আলোচনা করব। অর্থাৎ আজকে আপনারা আমাদের এই পোস্ট থেকে জানতে পারবেন জ্বরের এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম। অতএব সম্পূর্ণ পোস্ট বিস্তারিত পড়ে নিন।
জ্বরের এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম
বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট আপনি বিভিন্ন ফার্মেসীর দোকানে পেয়ে যাবেন। তবে এক এক অ্যান্টিবায়োটিক এক এক ধরনের প্রক্রিয়ায় অন্যান্য অণুজীবের বিরুদ্ধে কাজ করে। অ্যান্টিবায়োটিক সাধারণভাবে ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার হয়, ভাই*রাসের বিরুদ্ধে কাজ করে না। তবে আমাদের শরীরের এই জ্বরকে দূর করার জন্য বিভিন্ন এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট প্রদান করা হয়।
তবে এই এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আমাদের শরীরে দেখা দিতে পারে। তাই এই ওষুধগুলো সেবন করার পূর্বে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিবেন। নিম্নে আমরা জ্বরের এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম উল্লেখ করেছি অতএব সম্পূর্ণ পোস্ট একবার পড়ে নিন।
জ্বর ও সর্দি কাশি এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম কি
সর্দি সাধারণত ভাই*রাস দ্বারা আক্রান্ত হলে এই অবস্থা হয়। আবার শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা থেকে বৃদ্ধি পেলে তা জ্বর হয়। অতঃপর কাশি হয় আর গলায় কিছু প্রবেশ করার কারণে। তবে এইসব রোগ নিরাময়ের জন্য বিভিন্ন ঔষধ আপনি পেয়ে যাবেন। তবে এখানে আছে উল্লেখ করেছি জ্বর সর্দি কাশির অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম। যে ট্যাবলেট বা ওষুধগুলো গ্রহণ করলে আপনার উপরোক্ত সমস্যাগুলো অতি দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।র তাই ট্যাবলেট গুলোর নাম জেনে রাখা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কয়েকটি জ্বরের এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম উল্লেখ করা হলো।
- Azin 250 mg
- AZ 250 mg
- AZ 500 mg
- Adiz 500 mg
- Azin 500mg
- Zimex 250 mg
- Zimex 500 mg
- Adiz 250 mg
জ্বরের এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর দাম কত
এই জ্বরের এন্টিবায়োটিক ওষুধগুলো সাধারণত সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে এই ওষুধগুলো ট্যাবলেট এবং ক্যাপসুল আকারে পাওয়া যায়। আবার কিছু ইনজেকশন রয়েছে। যেগুলোর দাম আরও ভিন্নতা রয়েছে। সাসপেনশন আকারে কিছু ওষুধ রয়েছে যেগুলো ১৮০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। যেমন একটি ট্যাবলেট রোমাইসিন এন্টিবায়োটিক এর দাম ৩৫ টাকা। এছাড়া এই মূল্যে আরও অনেকগুলো এন্টিবায়োটিক ওষুধ পাওয়া যায়।
বাচ্চাদের জ্বরের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের নাম সমূহ
ছোট এবং বড় সবার জন্য এন্টিবায়োটিক ওষুধ রয়েছে। তবে ছোটদের জন্য আলাদা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ রয়েছে। যেগুলো ডাক্তাররা প্রদান করে থাকেন। তবে আপনার পরিচিত কারোর বাচ্চা যদি অনেক বেশি জ্বর হয়ে থাকে। তাহলে তার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ আপনি ক্রয় করতে পারবেন। তবে কোন ওষুধগুলি ক্রয় করবেন সেই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ গুলোর নাম আমরা এখানে উল্লেখ করেছি।সেই বাচ্চাদের জ্বরের এন্টিবায়োটিক ওষুধগুলো হচ্ছে।
- AZ 250 mg
- AZ 500 mg
- Adiz 500 mg
- Azin 500mg
- Zimex 250 mg
- Azin 250 mg
তবে এই ওষুধগুলো বাচ্চাদের খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই ভালো একজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। এবং প্রয়োজন উপদেশগুলো গ্রহণ করে বাঁচাকে ওষুধগুলো সেবন করান।
জ্বরের এন্টিবায়োটিক খাওয়ার নিয়ম
বিভিন্ন ওষুধ সেবন করার পাশাপাশি, এই এন্টিবায়োটিক ওষুধ গুলো সে ধরনের কিছু নিয়ম এবং নির্বাচনাবলী রয়েছে। যেগুলো অবশ্যই মেনে চলা উচিত, কেননা এই ওষুধের বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যেগুলো অনিয়মিত সেবনে ফলে আপনার শরীরে মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। এমন কি মৃ*ত্যু ঝুকি হতে পারে। তাই সঠিক নিয়ম মেনে জ্বরের এন্টিবায়োটিক ঔষধ গুলো খাওয়া উচিত। চলুন জ্বরের এন্টিবায়োটিক ঔষধ গুলোর খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই।
- এজিথ্রোমাইসিন ট্যাবলেট: এই ট্যাবলেটটি প্রতিদিন একবার করে মোট সাত দিন খেতে হবে বা খেতে পারবেন।
- এরিথ্রোমাইসিন ট্যাবলেট: তবে শিশুর ক্ষেত্রে প্রতি কেজিতে 50mg করে প্রদান করতে হবে এবং দিনে চারবার। আর এই এন্টিবায়োটিক ঔষধকে একটি শিশুকে সাত দিনের বেশি সময় ধরে এন্টিবায়োটিক খাওয়ানো উচিত নয়। আর একটি পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির জন্য উপস্থিত একটি ট্যাবলেট খেলে হয়ে যাবে।
- ডক্সিসাইক্লিন ক্যাপসুল: একজন শিশুর ক্ষেত্রে এই ট্যাবলেট টি ব্যবহার করা উচিত নয়। একটি পূর্ণবয়স্ক লোকের জন্য একটি ক্যাপসুল খেলা হয়ে যাবে।
- অ্যামোক্সিসিলিন ক্যাপসুল দিনে তিন থেকে চার বার মোট সাত দিন।
- সেফিক্সিম: কমপক্ষে প্রতি দিনে এক থেকে দুই বার মোট সাত দিন।
বেশি জ্বরের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের নাম সমূহ
এছাড়াও এই এন্টিবায়োটিক ঔষধ গুলোর বিভিন্ন ধরন এবং কার্যকার্য। একজন রোগীর শরীরে অবস্থা অনুযায়ী ডাক্তারের বিভিন্ন রকমের এন্টিবায়োটিক রোগীকে প্রদান করে থাকেন। নিচে আরো কয়েকটি জ্বরের এন্টিবায়োটিক ওষুধের নাম উল্লেখ করা হলো।
- সেফট্রিয়াক্সোন (ইনজেকশন)
- সেফিক্সিম (ক্যাপসুল)
- সেফুরক্সিম + ক্লাভুলানিক এসিড
- সিপ্রোফ্লক্সাসিন
- এজিথ্রোমাইসিন।
তবে এই জ্বরের এন্টিবায়োটিক ওষুধের মধ্যে কিছু রয়েছে ট্যাবলেট আবার কিছু রয়েছে ইনজেকশন। যেগুলো ডাক্তাররা রোগীর শরীরের অবস্থা অনুযায়ী প্রদান করে থাকেন।
জ্বরের এন্টিবায়োটিক এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
এই এন্টিবায়োটিক ওষুধগুলো আমাদের শরীরের বিরূপ প্রভাব করতে পারে। তাই এই ওষুধগুলো সাবধানতার সাথে আমাদের গ্রহণ করা উচিত। তবে যে পার্শ্ববর্তী গুলো আমাদের শরীরে এই এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন করার কারণে দেখা দেয় তা হচ্ছে।
- ত্বকের লালত্ব ভাব (Redness Of Skin)
- জ্বর (Fever)
- স্বাদের পরিবর্তন (Change In Taste)
- কোষ্ঠকাঠিন্য (Constipation)
- মাথা ঘোরা (Dizziness)
- মাথা ব্যাথা (Headache)
- বমি ভাব বা বমি (Nausea Or Vomiting)
- ডায়রিয়া (Diarrhoea)
- পেটে ব্যথা (Abdominal Pain)
- বিশৃঙ্খলা (Confusion)
উপরে উল্লেখ করা লক্ষণ গুলি ছাড়াও আরো বিভিন্ন লক্ষণ আপনার শরীরে এই এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন করার কারণে দেখা দিতে পারে।
জ্বরের এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট বেশি খেলে কি হয়
আমাদের শরীরে অনেক ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা উপকারী এবং অপকারী। তবে এই এন্টিবায়োটিক ওষুধগুলো অতিরিক্ত সেবন করার ফলে আমাদের অনেক ক্ষতি হতে পারে। তবে এই এন্টিবায়োটিক ওষুধ টি অতিরিক্ত গ্রহণ করলে শরীরে একটি অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়ে যায়, যার ফলে যে অ্যান্টিবায়োটিকগুলি প্রয়োজনেও কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তারা এই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ অতিরিক্ত গ্রহণ করার ফলে গ্যাস্ট্রো সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, আবার লিভার ও কিডনি কেউ ড্যামেজ করতে পারে।
জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
অনেকেই রয়েছেন যাদের শরীরে জ্বর হলে তার ডাক্তারের নিকট পৌঁছাতে চান না, এবং ঘরোয়া উপায় তাদের এই জ্বরকে কমানোর চেষ্টা করে থাকেন। তবে তারা চাইলে ঘরোয়া উপায় আপনার জ্বরকে রাতে পারবেন। তবে কিভাবে আপনার জ্বর কে ঘর উপায়ে সারাবেন তা নিয়ে আজকে আলোচনা করেছি। অতএব নিচে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে, যে তথ্যগুলো আপনাকে আপনার জ্বর সারানোর উপায় জানিয়ে দিবে। নিচে ঘরোয়া ভাবে জ্বর কমানোর উপায়গুলো উল্লেখ করা হলো।
- মধু
- আদা
- তুলসী পাতা
- দারুচিনি
- সুন
- ধনে বীজ
- আদা চা
- ভিটামিন
- তরল খাবার
- বিশ্রাম
উপরিউক্ত উপাদান গুলো সেবন করলে বা নিয়মগুলো মেনে চলে আপনার জ্বর এক নিমিষে দূর হয়ে যাবে। পূর্বে এই ঘরোয়া উপায় গুলো অনেক বেশি ব্যবহার হত। আর এই ঘরোয়া উপায় উপায়ে জ্বর সারানোর একমাত্র মাধ্যম ছিল। আপনি চাইলে উপরিউক্ত উপায় গুলো দেখতে পারেন।
শেষ কথা
আজকে আলোচনায় আমরা জ্বরের বিভিন্ন ওষুধ নিয়ে আলোচনা করেছি। যাদের অনেক বেশি জ্বর রয়েছে তারা আমাদের এই পোস্ট থেকে বিভিন্ন ওষুধের নাম জানতে পারবেন। আর অতি দ্রুত জ্বর সারানোর জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ অনেক বেশি কার্যকর। তাই আজকের আলোচনায় জ্বরের এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম। সমূহ আমরা উল্লেখ করেছি। যদি আমাদের এই পোস্ট আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে। তাহলে অবশ্যই আপনার আশেপাশের ব্যক্তিদের কে এই পোস্ট শেয়ার করে তাদেরকে জ্বর কমানোর ওষুধ সম্পর্কে জানিয়ে দিন। ধন্যবাদ