জিংক সিরাপ এর উপকারিতা কি কি

আমাদের শরীর বিভিন্ন উপাদান দ্বারা গঠিত। তাই প্রত্যেক উপাদান এর ঘাটতি পূরণের জন্য বিভিন্ন ভিটামিন আমাদের দেহে প্রয়োজন হয়। তবে ভিটামিন বা উপাদানগুলোর অভাবে আমাদের শরীরে ঘাটতি দেখা দিলে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয়। তবে আজকে আলোচনা করব জিংক সিরাপ নিয়ে। অর্থাৎ শরীরে জিংকের ঘাটতি তৈরি হলে নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। এখন জিংক সিরাপ এর উপকারিতা কি তা প্রত্যেকের জেনে নেওয়া উচিত।

আজকের আলোচনায় জিংক সিরাপ এর উপকারিতা সহ জিংক সিরাপ কেন খায়, খাওয়ার নিয়ম। এবং এই জিংক সিরাপ এর দাম কত টাকা। শিশুর জিংকের প্রয়োজনীয়তা, বড়দের জন্য জিন সিরাপ এবং জিংক সিরাপ এর অপকারিতা সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই এসব প্রশ্নের সকল উত্তর জানতে আমাদের এই পোস্ট প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। 

জিংক সিরাপ এর উপকারিতা

শরীরের বিভিন্ন রোগ, এবং দেহের অস্বাভাবিক ক্রিয়া দমনে এই জিংক সিরাপের অনেক উপকারিতা। এই জিংক সিরাপ শরীরের বিভিন্ন উপকার সাধনে ব্যবহার করা হয়। শারীরিক বৃদ্ধি এবং বিকাশ, শিশুদের মধ্যে তীব্র ডায়রিয়া হওয়া এবং শরীরের ক্ষত নিরাময়ের দৃঢ় হওয়ার মত সমস্যা গুলিকে প্রতিরোধ। এবং চিকিৎসার জন্য এই জিংক সিরাপ অনেক বেশি উপকার এবং একে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও এই জিংক সিরাপের বিশাল উপকারিতা রয়েছে। যা একজন ব্যক্তির জন্য জেনে নেওয়া অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। জিংক সিরাপ এর উপকারিতা আরো বিস্তারিত জানতে একটু নিচে প্রবেশ করুন।

জিংক সিরাপ কেন খায়

অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে জিংক সিরাপ কেন খাওয়া হয়? সহজ এবং সোজা উত্তর হচ্ছে শরীরে পুষ্টির উপাদান কমে গেলে। আপনার শরীরের যদি বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির অভাব দেখা দেয় তাহলে এই জিংক সিরাপ আপনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে খেতে পারেন। এই জিংক সিরাপ সেবন করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এমনকি আপনার শরীরে থাকা বিভিন্ন ক্ষত গুলি খুব দ্রুত নিরাময় হয়। এই জিংক  সিরাপের এতই উপকারী যা আপনার শরীরের হাত হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপাদান এবং পুষ্টি মেটাতে এই জিংক সিরাপ খাওয়া হয়। 

জিংক সিরাপ খাওয়ার নিয়ম

প্রাপ্তবয়স্ক যারা রয়েছেন, তাদের দৈনিক ১ থেকে ৩ বার ৪ চা চামচ করে খেতে পারেন। তবে এই ওষুধটি অবশ্যই খাওয়ার পরে খেতে পারেন। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এই খাওয়ার নিয়ম গুলো অনেকটা ভিন্ন রকম। তাই সর্বোপরি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই জিংক সিরাপ গ্রহণ করবেন।

আর যদি কোন শিশু এই জিংক সিরাপ গ্রহণ করতে চান তাহলে দিনে দুই বার এক চামচ করে খেতে পারবেন। অর্থাৎ সকালে এক চামচ এবং রাতে এক চামচ খাওয়ার পরে। ২ থেকে ৬ মারে শিশু  এই জিংক সিরাপ গ্রহণ করবে দৈনিক ১০ মি.গ্রা. জিংক করে ১০-১৪ দিন।

জিংক সিরাপ এর দাম কত

এই জিংক সিরাপ আপনি বাজারে ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের এবং কোম্পানির ক্ষেত্রে জিংক সিরাপের কার্যকর অনুযায়ী বিভিন্ন সিরাপ পাওয়া যায়। যেগুলোর দামের অনেকটা পার্থক্য হতে পারে। তবে আপনাদের উদ্দেশ্যে আমরা এই জিংক সিরাপ এর দাম উল্লেখ করেছি। এবার আপনার নিকটে ফার্মেসির দোকানে ভিটামিন বি পেয়ে যাবেন যার মূল্য ৮০ টাকা। অর্থাৎ কিছু সেরা করেছে যার মূল্য ৮০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন।

জিংক সিরাপ কিসের ওষুধ

যেসব শিশুস্বল্প জন্ম ওজনের ও আমিষ ক্যালরি ঘাটতিজনিত অপুষ্টিগ্রস্ত সে সকল শিশুর বৃদ্ধিতে জিংক সাহায্য করে। এছাড়াও এই শিশু যখন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় তখন সেই শিশুকে খাবার স্যালাইন ও  জিংক দিতে বলা হয়। এছাড়া আপনার যদি মনোযোগ ঘাটতি হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিসঅর্ডার  থাকে তাহলে এসব ক্ষেত্রে আপনি এ জিংক খেতে পারেন।

এছাড়াও হাইপোগিউসিয়া, টিনাইটাস, ক্রোহন রোগ, আল্জ্হেইমার রোগ, ডাউন সিন্ড্রোম এ এই জিংক সিরাপ খেতে পারেন। অতএব উপরে উল্লেখিত এবং পেপটিক আলসার, পুরুষত্বহীনতা, অঙ্গ দোষ, অস্টিওপোরোসিস, রিউমাটয়েড, আর্থ্রা‌ইটিস, এবং পেশী খিঁচুনির চিকিৎসায় এই জিংক সিরাপ ব্যবহার করা হয় মূলত এইজিংক সি রাপ উল্লেখিত রোগের ঔষধ।

শিশুর জিংকের প্রয়োজনীয়তা

ইতিমধ্যে হয়তো জিংক এর প্রয়োজনীয়তা শিশুর জন্য উল্লেখ করেছি। কম ওজনের ও যে শিশুর আমিষ ক্যালরি ঘাটতিজনিত অপুষ্টিগ্রস্ত রয়েছে সেসব শিশুর বৃদ্ধিতে জিংক সাহায্য করে। এছাড়াও এই শিশু যখন হেপাটাইটিস, টিপি এন, এন্ডোকারমাইটিস,এক্রোডারমাইটিসপ্রভৃতি রোগে ভোগে কতক্ষণ তাকে এই জিংক গ্রহণ করতে বলা হয়। অর্থাৎ উপরে উল্লেখিত কারণগুলো জিংকের অভাবে দেখা দেয়। তাই শিশুর ক্ষেত্রে জিংকের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

বড়দের জন্য জিংক সিরাপ

প্রত্যেক জিনিসের ভালো এবং মন্দ রয়েছে। যারা বড়রা এই জিংক সিরাপ খেতে চাচ্ছেন। তারা দিনে তিনবার করে এবং চা চামচ খেতে পারবেন।বড়রা যারা জিংক সিরাপ খেতে চাচ্ছেন তাদের ত্বকের উন্নতি সহ হরমোনের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রন এবং ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে ও শ্বাস যন্ত্রের উন্নতি ঘটায়। অর্থাৎ বড়দের ক্ষেত্রে এই জিংক সিরাপ অনেক বেশি উপকারী। আর আপনার শরীরে যদি এই জিংকের অভাব দেখা দেয় তাহলে অরুচি, আন্ত্রিক রোগ, যকৃতের রোগ, পুড়ে যাওয়া, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগ দেখা দেয়।

জিংক সিরাপ এর অপকারিতা

এই সিরাপ খেলে যেমন উপকারিতা পাওয়া যায় তেমনি এই সিরাপের কিছু অপকারিতা রয়েছে। তবে প্রত্যেকের শরীরে উপকার হলেও অন্য মানুষের শরীরে এই জিংক সিরাপের অপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। যেসব অপকারিতা জিংক সিরাপ গ্রহণ করলে লক্ষ্য করা যায় তা নিম্ন উল্লেখ করা হলো।

  • মাথাব্যথা
  • পেট ব্যথা
  • ডায়রিয়া হওয়া
  • বমি হওয়া
  • এবং বমি বমি ভাব

তাই এই ওষুধ বা সিরাপ গ্রহণ করার পূর্বে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নিবেন। যাতে খুব নিরাপদে আপনি এই জিংক সিরাপ গ্রহণ করতে পারেন।

জিংক সিরাপ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

এই ওষুধের অপকারিতা এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া প্রায় একই। যেমন পার্শ্বপ্রতিকরা বলতে এই ঔষধ গ্রহণ করলে আপনার ডায়রিয়া হতে পারে। আবার মাথা ঘোরাতে পারে এবং মাথাব্যথা হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে বমি হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। তাই এই ওষুধগুলো গ্রহণ করা করবে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে আপনার শরীরের অবস্থা আলোচনা করুন। অতঃপর এই জিংক সিরাপ গ্রহণ করুন। 

শেষ কথা

আশা করছি আমাদের এই পোস্ট করে আপনারা অনেকটা উপকৃত হয়েছেন। আজকের আলোচনা ছিল জিংক সিরাপ এর উপকারিতা সম্পর্কে। যদি এই পোস্ট করে আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে আপনার আশেপাশের ব্যক্তিদেরকে এই পোস্ট শেয়ার করে জানিয়ে দিবেন। আর আমাদের  উপস্থাপন করার তথ্যগুলো যদি ভুল হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই নিজের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন।